Mdigitech

Aboddho Prem Part 4 | Romance Love Story

রূপের বয়স কেবল উনিশ। চোখে স্বপ্ন, মুখে একরাশ নিরবতা। রূপের বাবা নেই, মা-মেয়ের ছোট একটি সংসার। মায়ের আঁচলই তার পৃথিবী। রূপ ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছে, তাদের কোনো আত্মীয়স্বজন নেই। কেউ কখনো তার বা তার মায়ের খোঁজ নিতে আসেনি। এর পেছনে অবশ্য একটা কারণ আছে। কারণটা রূপ জানে, তাই সে কোনোদিন মাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করেনি।
সে ছোট বেলা থেকে এটাই জানে, কারো সঙ্গে মিশতে নেই, কারো দিকে তাকাতেও নেই। মা আয়েশা বেগম যেন এক দেওয়াল তুলে দিয়েছেন তার চারপাশে—ভিতরে রূপ, বাইরে কেবল ভয়।ছোট একটা অফিসে চাকরি করেন আয়েশা বেগম। সংসার চলে টেনেটুনে। রূপ ভার্সিটিতে পড়ে, তবে মায়ের চোখ এড়িয়ে এক পা-ও ফেলতে পারে না। রূপ অসম্ভব সুন্দরী। তাই তার মা সবসময় মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। ভাবেন, স্বামী নেই, ভাই নেই—এই যুবতী মেয়েকে নিয়ে সমাজে চলা কতটা কঠিন!
মা ভয়ে থাকেন—এই সুন্দরী মেয়েকে কেউ হয়তো আবার লক্ষ্য করবে। আগের এলাকার ছেলেগুলো যেমন করত। বিশেষ করে একজন… যে রূপের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। সে কারণে তারা এলাকা পাল্টেছে, ঠিকানা পাল্টেছে, শুধু ভয়টা পাল্টায়নি।
আয়েশা বেগম মেয়ের ব্যাপারে খুবই সতর্ক। যতটা সম্ভব রূপকে চোখে চোখে রাখেন। কোনো ছেলে তো দূরের কথা, রূপকে মেয়ে বন্ধুদের সাথেও মিশতে দেন না। রূপও কখনো মায়ের কথা অমান্য করে না।সকালের আলো তখনও ভালো করে ফোটেনি।আয়েশা বেগম রূপকে নিয়ে বাজারে রওনা দিলেন। শরীরটা বিশেষ ভালো না, তাই মেয়েকে সঙ্গে নিয়েছেন; নাহলে একাই যেতেন—সুন্দরী মেয়েকে বাজারে নেওয়ার কথা চিন্তাও করতেন না। রাস্তায় বের হতে হতে রূপ বলল,
— “মা, তোমার শরীর ভালো না। আজ না হয় আমি একাই বাজারে যাই।”
আয়েশা বেগম রেগে উঠলেন,
— “আমি যেখানে তোকে বাসা থেকে বের হতে দিই না, সেখানে তোকে একা বাজারে পাঠাব?”

— “ মা তুমি এমন ভাবে চিন্তা করো যেন ছেলেধরা এসে আমাকে ধরে নিয়ে যাবে! দুনিয়ায় আর কোনো মেয়ে নেই।”

— “আমার দুশ্চিন্তার কারণটা তুই জানিস রূপ।”

— “আচ্ছা, বেশ বুঝলাম। তবে আজ আকাশের অবস্থা ভালো না, তোমার শরীরও খারাপ। তাই বলছি, বাজারে যেতে হবে না। গলির মোড়ের দোকান থেকে ডিম-ডাল যা পাওয়া যায়, তাই নিয়ে আসি।”
আয়েশা বেগম আর আপত্তি করলেন না। রূপকে সঙ্গে নিয়ে গলির মোড়ের দোকানে গেলেন বাজার করতে। দোকানদার রূপকে দেখে যেন কেমন চমকে উঠল, অন্য কাস্টমারদের উপেক্ষা করে এগিয়ে এসে বলল,
— “কি লাগবে মামুনি? বলো, আমি দোকানের ছেলেকে দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিচ্ছি।”
দোকানদারের এমন ব্যবহারে আয়েশা বেগম চমকে উঠলেন। সাধারণত এই দোকানে সকালবেলা ভিড় থাকে, লাইন দিয়ে জিনিসপত্র নিতে হয়। আজ হঠাৎ এত সৌজন্য? তিনি কড়া গলায় বললেন,
— “রূপ, তুই পেছনে গিয়ে দাঁড়া। জিনিসপত্র আমি নিচ্ছি।”
রূপ কিছু না বলে পেছনে গিয়ে দাঁড়াল। আয়েশা বেগম সবকিছু কিনে টাকা দিলেন।
দোকানদার সাথে সাথে বলল,
— “টাকা লাগবে না, আপা।”
আয়েশা বেগম ভ্রু কুঁচকে তাকালেন,
— “মানে?”
— “মানে, এখন দিতে হবে না। মাস শেষে একসাথে দিলেই হবে। সবাই এভাবেই নেয়।”
এই কথায় আয়েশা বেগম অসন্তুষ্ট হয়ে টাকা দিয়ে গজগজ করতে করতে রাস্তায় নামলেন। বললেন,
— “সুন্দরী মেয়ে পেটে ধরাও জ্বালা… যেখানেই যাই, শকুনের চোখ পড়ে।”
রূপ বলল,
— “মা, কিছু বললে?”
— “নাহ, কিছু না। তবে রূপ, তুই আর এই দোকানে যাবি না। লোকটার নজর ভালো না।”
রূপ হেসে বলল,
— “মা, তুমি অযথা চিন্তা করছো। উনি আমাকে মেয়ের চোখে দেখেন।”
— “হ্যাঁ, হ্যাঁ, তোর চোখে তো সবাই ভালো। কিন্তু আমি চাই না আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক।”
— “মা, আগের এলাকার ছেলেগুলোই খারাপ ছিল,তাই বিরক্ত করতো। সবাই কি তেমন?”
— “সব ছেলেই তেমন। তুই কেন যে এত সুন্দর হলি!”
— “মা, তুমি না… থামো তো!”
বাড়িতে ফিরে আয়েশা বেগম সমাজের মানুষ জনদের অনেকক্ষণ বকাবকি করলেন। রূপ কোনোরকমে মাকে শান্ত করে অফিসে পাঠিয়ে নিজেও ভার্সিটিতে রওনা দিল।
দোকান পর্যন্ত আসতেই দোকানদার বলল,
— “মা, কিছু নিয়ে যাও। রাস্তায় খেতে খেতে যেও।”
রূপ এবার নিজেও অস্বস্তি বোধ করল। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে এক মুহূর্ত থেমে গেল। সাহস সঞ্চয় করে সে এগিয়ে গেল দোকানির দিকে।
—“চাচা…” কণ্ঠটা নরম, কিন্তু স্থির, আপনি এমন আচরণ করছেন কেন?”
দোকানদার খানিকটা অবাক হল, তবে নিজেকে দ্রুত সামলে নিয়ে বলল,
—” “কেমন আচরণ করেছি মা? আমি তো শুধু তোমার খেয়াল রাখার চেষ্টা করছি।”
রূপের চোখে প্রশ্ন জ্বলজ্বল করে উঠল।
—““খেয়াল রাখছেন? কিন্তু কেন?”
দোকানদার একটু থেমে বলল,
—-“জিসান চৌধুরী নিজে বলে গেছে তোমার খেয়াল রাখতে। এখন আমি যদি না রাখি, তাহলে কী করে হয় বলো তো মা?”
রূপের ভ্রু কুঁচকে উঠল।
—-“উনি বললেই শুনতে হবে? উনার কথায় আপনি জিনিসপত্র ফ্রিতে দিয়ে দিবেন?”
চাচা একটু অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন।
—-“তুমি কি বলছো মা! যার দয়ায় দোকানটা চলছে, তার বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নেব? কেমন করে?”
রূপ যেন কিছুই বুঝতে পারছে না।
—-“মানে কী? আমি যতদূর জানি, উনার বাসা তো অনেক দূরে। তাহলে এই দোকানের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক?”
একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দোকানদার উত্তর দিল,
—-“তুমি সত্যিই কিছু জানো না? জিসান চৌধুরীদের রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা। শহরের এমন কোনো গলি নেই, যেখানে ওদের জমি কিংবা বিল্ডিং নেই। এই দোকানটা, এই জায়গাটাও ওদের। আগে আমি ওদের বাসার ড্রাইভার ছিলাম। বয়স হয়ে গেছে, তাই ও নিজেই দোকান করে দিয়েছে আমাকে। ভাড়া নেই, খরচ নেই।”
রূপ স্তব্ধ হয়ে গেল। চুপ করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে নিচু গলায় বলল,
—“তারমানে উনি অনেক বড়লোক, তাই না?”
চাচা হেসে বলল,
—“বড়লোক? বরং বলো রাজপুত্র। পরিবারের একমাত্র ছেলে। আদরের তো শেষ নেই। তার ওপর, ওর নানা ছিলেন খুব ক্ষমতাধর ব্যক্তি। মারা যাওয়ার আগে তার ৯০ শতাংশ সম্পত্তি জিসানের নামে লিখে দিয়ে গিয়েছেন।”
রূপের মনে কেমন একটা অস্বস্তি ঘনিয়ে এল। কে এই জিসান চৌধুরী? কেন তার খেয়াল রাখার নির্দেশ দিচ্ছে? সে আর কিছু বলল না। নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে শুধু বলল,
— “আচ্ছা চাচা, আমি এখন যাচ্ছি। তবে একটা কথা—আমাদের কোনো সুযোগ-সুবিধা লাগবে না। আপনি উনাকে বলে দিবেন।”
দোকানদার মাথা নেড়ে বলল,
—–“এই ব্যাপারে আমি কিছুই করতে পারব না মা। তোমাদের কাছ থেকে আমি টাকা নিতে পারব না।”
রূপ কিছুটা বিরক্ত হয়েই বলল,
—-“চাচা, আশেপাশে তো আর কোনো দোকান নেই। তাই আমাদের এখানে আসতেই হয়। আপনি যদি এমন করেন, তাহলে?”
চাচা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
—- “তোমার কাছ থেকে টাকা নিলে জিসান আমাকে এখান থেকে উচ্ছেদ করে দেবে মা। তুমি জানো না—ও যতটা শান্ত স্বভাবের, রেগে গেলে ততটাই ভয়ানক। একবার যা বলে, তাই করে। কাল যাওয়ার সময়ও দু’বার বলেছে—‘রূপের খেয়াল রাখবেন।’ এখন যদি শোনে তোমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছি, তাহলে আমাকে রাস্তায় বসতে হবে।”
রূপের মুখে তীব্র হতাশার রেখা। কিছু বলার ছিল, কিন্তু ভাষা খুঁজে পেল না। শুধুই বলল,
“তাহলে আপনি কিছুই করবেন না?”
দোকানদার শান্ত কণ্ঠে বলল,
“আমার কিছুই করার নেই মা… তুমি বরং এ ব্যাপারে সরাসরি জিসানের সঙ্গে কথা বলো।”
🍁
রূপ ক্লাসে থেকেও মনোযোগ রাখতে পারছে না। প্রতিটা মুহূর্তে মনে হচ্ছিল, কেউ যেন তাকে দূর থেকে দেখছে—তাকিয়ে আছে নিঃশব্দে। দোকানদার চাচার কথাগুলো বারবার কানে বাজছিল—
“জিসান চৌধুরী নিজে বলেছে তোমার খেয়াল রাখতে।” কেন? কে এই মানুষটা? এত ক্ষমতাশালী একজন ব্যক্তি, যার সাম্রাজ্য শহরের প্রতিটি কোণে বিস্তৃত, সে কেন তার মতো একজন সাধারণ মেয়ের দিকে নজর রাখবে?

প্রথম ক্লাস শেষ হতেই  একরাশ রাগ নিয়ে জানের সামনে গিয়ে দাঁড়াল রুপ। ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ তার উপস্থিতি সবাইকে চমকে দিল। জানও কেমন চমকে উঠল, মুহূর্তেই সোজা হয়ে দাঁড়াল।
— “কিছু বলবে?” জান চোখ সরু করে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল।
— “আপনার সঙ্গে একটু কথা ছিল,” রূপ গম্ভীর গলায় বলল।
— “বলো, শুনছি।”
রূপ এক নিঃশ্বাসে বলে ফেলল,
—“আপনার সঙ্গে আমার ঝামেলা তো মিটে গেছে, তাই না? আমি গতকাল বারবার ক্ষমা চেয়েছি। আপনিও বলেছিলেন মাফ করে দিয়েছেন। যদি সত্যি মাফ না করে থাকেন, তাহলে বলুন—কি করলে আপনি ক্ষমা করবেন? পা ধরে মাফ চাইতে হবে?”
রূপের কথাগুলো যেন জানের মনে ধাক্কা  দিল মুখটা কঠিন হয়ে গেল, চোখের কোণটা টেনে উঠল কিছুটা বিরক্তিতে। জান একবার চোখ তুলে চারপাশে তাকিয়ে সবাইকে হাত ইশারায় চলে
যেতে বলল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চারপাশটা নিস্তব্ধ হয়ে গেল। জান ও রূপ—দু’জন ছাড়া আর কেউ নেই। হঠাৎ নির্জনতা যেন ভয় ঢেলে দিল রুপের মনে। পরিস্থিতির হঠাৎ বদলে যাওয়া রূপকে ভয় ধরিয়ে দিল। রাগ মিলিয়ে গিয়ে জায়গা নিল একধরনের উদ্বেগ। চারদিকে নির্জনতা, আর সামনেই দাঁড়িয়ে আছে জান—চোখে যেন অদ্ভুত হিংস্রতা।সে একটু পেছনে সরে এল। জান ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো।
— “এবার বলো, কী হয়েছে? আমি তোমার সঙ্গে কোনো খারাপ ব্যবহার করেছি বলে তো মনে পড়ছে না।”
রূপ তখন আর কিছু বলতে পারছে না। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না, কাঁপা কন্ঠে বলল,
—“আপনি আমার দিকে ওইভাবে তাকাচ্ছেন কেন?”
—“ তোমার চোখে ভয় দেখছি। কিন্তু আমি তো খারাপ কিছু করিনি। তাহলে এত ভয় কিসের? কতবার বলব? আমি বাঘ-ভালুক নই যে এভাবে ভয় পেতে হবে? এত ভয় পাও কেন? কী সমস্যা সেটা বলো।”
রূপ কাঁপা গলায় বলতে লাগল,
__“আ… আপনি ক্যান্টিনে… আর দোকানে… ব… বলে দেন, আমার কোনো স… সু… সুবিধা লাগবে না…”
জান নীরব গলায় বলল,
—“পানি খাবে?”
— “আপনার কি মনে হয় আমি ফাজলামি করছি?” রূপ কেঁপে উঠল।
জান হেসে ফেলল। কিন্তু সেই হাসি আবার দ্রুত থামিয়ে বলল,
___ “না, ফাজলামি বলছি না। তুমি যেভাবে কাঁপছো, মনে হলো পানি লাগতে পারে। তাই বললাম।”
রূপ মুখ কালো করে রাগে গর্জে উঠল, “আপনি আবার হাসলেন?”
জান এবার একটু মজা করেই বলল,
___“সরি, হাসতে চাইনি। কিন্তু তোমার রাগটা কেমন যেন। তোমার মতো মেয়ের ওপর রাগ জমে না।”
রূপ ঠোঁট চেপে বলল,
___“আমি ফাজলামি করছি না।”
— “এই তো! এখন আর তোতলাচ্ছ না। এবার বলো, কী বলতে এসেছিলে?”
রূপ মুখ ঘুরিয়ে বলল,
—“কিছু না।”
বলেই সে উল্টো দিক ঘুরে হাঁটা দিল।
জান পেছন থেকে বলল,
—“এই ক্লাস তো এদিকে, ওদিকে কোথায় যাচ্ছ?”
রূপ থেমে পিছন ফিরে তাকাল। চোখে রাগ, ঠোঁটে ধিক্কার।
— “আবার কী করলাম?” জান একটু নরম হয়ে জিজ্ঞেস করল।
— “আপনি ভীষণ অসভ্য একটা ছেলে। আপনি কি সেটা জানেন?”
জান হালকা হাসি দিয়ে বলল,
—“না, আগে জানতাম না। এখন জানলাম। এবার থেকে টি-শার্টে বড় করে লিখে রাখব—‘অসভ্য’ ঠিক আছে?”
রূপ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকল। কিছু বলল না।
— “সুন্দরীদের রাগ মানায় না,” জান আবার মৃদু হাসি দিল।
— “আপনি কিন্তু সীমা পেরিয়ে যাচ্ছেন।”
— “সত্যি বললেও দোষ?”
— “শুনোন এই মুহূর্ত থেকে আপনি আমাকে চেনেন না, আমিও আপনাকে চিনিনা বুঝেছেন?”
জান মুচকি হেসে বলল,
—“তোমার মাথা খারাপ হতেই পারে, তাই বলে আমারটাও হতে হবে?”
— “মানে কী?”
— “মানে, এতকিছু ঘটে যাওয়ার পরও তুমি বলছো তুমি আমাকে চিনো না! এর মানে তো—তোমার মাথায় সমস্যা আছে। তাই না?”
রূপ জানের চোখে হাসি দেখে তেতে উঠল।
— “আপনি শুধু অসভ্য না, বাজে ছেলেও।”
— “আর কিছু ?”
রূপ দাঁত চেপে বলল,
–“ইচ্ছে করছে মেরে আপনার নাক মুখ ফাটিয়ে দেই!”
জান হেসে ফেলল,
—“তুমি চাইলে আমি সেই সুযোগও দিতে রাজি। তবে আগে শরীরে একটু মাংস বাড়াও। এখন আমি মারার সুযোগ দিলেও কোন কাজ হবে বলে মনে হচ্ছে না । উল্টে তোমার হাতটাই ভেঙে যাবে।”
— “আপনি আমাকে অপমান করছেন?
— “একদমই না।”
হঠাৎ রূপ চোখ কপালে তুলে চিৎকার করে উঠল, __“ওমা গো! আপনার পেছনে ওটা কী!”
জান ভয়ার্ত হয়ে পেছন ফিরে তাকাল। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে রূপ এসে তার হাতে জোরে একটা চিমটি কেটে সজোরে দৌড় দিল।
জান হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। কয়েক সেকেন্ড পর নিজের অজান্তেই তার ঠোঁটে এক অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠল।
এতক্ষণ দূর থেকে সব কিছু দেখছিল জিম। এবার সে বিস্ময়ে চোখ বড় করে এগিয়ে এলো।
— “এটাও সম্ভব?”
জান তাড়াতাড়ি হাসি চাপা দিয়ে গম্ভীর হয়ে গেল।
— “কি… কী বলতে চাস?”
জিম হেসে বলল,
__ “তুই হাসতে পারিস, খুনসুটি করতে পারিস—এটা আমার জানা ছিল না। সবসময় রাগী আর জেদি জিসানকে দেখেই অভ্যস্থ আমরা আন্টি যদি তোকে এক অবস্থায় দেখত, নিশ্চিত রূপকে ধরে নিয়ে তোর রুমে সাজিয়ে রেখে দিত!”
জান তাকিয়ে বলল, “আইডিয়াটা মন্দ না… সত্যিই যদি পারতাম ওকে নিজের করে রাখতে…”
তার গলা ধীরে হয়ে এল।
— “আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না, একটা মেয়ে কীভাবে এত মিষ্টি হতে পারে…”

চলবে…!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Scroll to Top